দৌলতপুর প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার গ্রাম -গঞ্জের হাট- বাজার গুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি, বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি। গত চারদিন ধরে গ্রামের হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কেউ করোনা রুখতে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। বরং আগের মতোই মানুষ চা-স্টলে বসে আড্ডা দিচ্ছে, সিগারেট টানছে। মুখে মাস্ক আছে-এমন দুই-একজন খোঁজে পাওয়াও ছিল দুষ্কর।
উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম এবং হাট-বাজার ঘুরেও একই চিত্র পাওয়া গেছে। অনেক জায়গায় সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে। সবাই ভিড় করছে। আবার স্থানীয় হাট-বাজারে পণ্য কেনা-বেচায়ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। হাজার হাজার মানুষ হাট-বাজারের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। করোনা নিয়েও কারও ভ্রুক্ষেপ দেখা যায়নি।
এলাকার মসজিদ গুলিতে একই অবস্থা, শতকরা ৪/৫ জন মুসল্লী মাস্ক ব্যবহার করছে, নেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা। এ অবস্থায় সবাইকে আরো বেশি সচেতন করা না হলে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
ফিলিপনগর গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, গ্রামের মানুষ এত অ-সচেতন যে তারা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পালন করেন না। সরকার প্রতিনিয়ত তাদের সচেতন করছে, কিন্তু গ্রামের মানুষগুলো সেই নিয়ম মানছেন না, এ জন্য আমরা খুবই আতঙ্কিত ও চিন্তিত।
পি.এস.এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সমাজ সেবক ইসাহক আলী বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে উপজেলা প্রশাসন অনেক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু মানুষ স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা করছে না। প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতা কমিটি গঠন করে দেওয়া হলে মাস্ক ব্যবহার থেকে শুরু করে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে ওই কমিটি দৃষ্টি রাখবে, এতে কিছুটা হলেও মানুষ সচেতন হবে।
গ্রামের হাট বাজারগুলোতে প্রচার-প্রচারণা, স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসনের সব ধরনের কার্যক্রম চলছে। প্রত্যন্ত এলাকাতে মানুষকে সচেতন করতে থানা পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন । তিনি বলেন, আমরা টহল বৃদ্ধি করেছি। পুলিশের উপস্থিতি থাকা অবস্থায় এক ধরনের চিত্র, ফিরে আসার পর ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। নিয়মগুলো পালনের বিষয়টি তাদের ভেতর থেকে আসে না। জোর করে পালন করানো কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে, তবুও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে যাতে সব মানুষ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এবং নিজেদের সুরক্ষিত রাখে। তবে সচেতন মহল প্রয়োজনে পুলিশকে একটু কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানান।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব জনগণ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জনসাধারণ যাতে মাস্ক পরে চলাচল করে সেটি নিশ্চিত করছি, ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে সেটির প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। বিনা কারণে যাতে বাইরে বের না হয় সেটা নিশ্চিত করতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালাচ্ছি বিনা কারনে মানুষ বাইরে বের হলে বিভিন্ন রকম শাস্তি ও অর্থদন্ড করছি আমরা।
অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের হিসাবে এ যাবৎ পর্যন্ত উপজেলায় ৮৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছে এর মধ্যে ১৯জনের মৃত্যু হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি আছে ২১জন, হোম আইসোলেশনে ৩৪৫জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। উল্লেখ্য গত ১ সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছে ২০০ জন মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের,হাসপাতালে ভর্তি আছে ২২ জন।