মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঝড়ের তান্ডবলীলায় লন্ডভন্ড হয়ে পাল্টে গেছে দু’গ্রামের চেহারা। গভীর রাতে আচমকা ঝড়ে উড়ে গেছে গ্রামের অসংখ্য বসতঘর, হাঁস মুরগী ও গরুর খামারের টিনের চালা। একই সাথে বিদ্যুতের খুঁটিসহ উপড়ে গেছে প্রচুর গাছপালা। এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কয়েক গ্রামের গ্রাহকদের।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার সালুয়া ও রামদী ইউনিয়নের সীমন্তবর্তী মাছিমপুর ও মনোহরপুর নামক দুই গ্রামের কিছু অংশজুড়ে ভয়াবহ ঝড়ের এ তান্ডব চলে।
স্থানীয় সালুয়া ইউপি সদস্য মো. হারিছ মিয়া জানান, প্রায় ৫ মিনিটের ঝড়ে বড় বড় বিশাল আকৃতির শতাধিক গাছগাছালিসহ বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ঘর-বাড়ি ও রাস্তা ঘাটের উপরে পড়ে আছে। আচমকা এই ঝড়ে অনেকের বসত ঘর, হাঁস-মুরগী ও গরুর গোয়াল ঘরের টিনের চালা উড়ে যাওয়ায় ঝড়ের পরবর্তী সময়ে সারারাত বৃষ্টিতে ভিজে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছিলো মানুষ।
মাছিমপুর গ্রামের মানুষ জানান, ঘুমের মধ্যে মধ্যরাতে হঠাৎ একটি ঝড় এসে আমাদের সবকিছু শেষ করে দেয়। অনেকের ঘরে গাছপালা উপরে পড়ে ঘর ভেঙে যায়।
ওই গ্রামের মোছা. সুচি ভুঁইয়া (৩২) সাংবাদিকদের জানান, ঘুমের মধ্যে রাত ১টার দিকে হঠাৎ কয়েক সেকেন্ডের একটি ঝড় এসে আমাদের ঘরে বিকট শব্দ হানা দেয়। এসময় বিশাল একটি গাছ আমার ঘরের উপরে পড়লে, ঘর ভেঙে আমার ও আমার মেয়ের উপড়ে পরে । এসময় আমরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকি কিন্তু ঝড়ের শব্দ কেউ আমাদের ডাক শোনিনি ।
তখন মনে হয়েছিলো এটাই বোধহয় আমার শেষ রাত। একপর্যায়ে পাশের বাড়ির মানুষজন এসে ঘরের দরজা কেটে আমার মেয়ে ও আমাদেরকে ঘর থেকে উদ্ধার করে। এই ঝড় আমার ঘরে থাকা ফ্রিজ, আলমারি, সৌরবিদ্যুৎ সহ এক কথায় আমার সারাজীবনের সকল সম্বল বিলিন করে দিয়েছে।
মনোহরপুর গ্রামের জসিম খাঁন (৫০) বলেন, গত রাতের আচমকা ঝড়ে আমার দুইটি গরুর ঘর ও আমার বসত ঘরের চিনের চালা উড়ে গেছে এবং অসংখ্য গাছগাছালি উপড়ে গেছে এবং আমার চাচাতো ভাইয়ের একটি টিনের ঘর পুরো বিলিন হয়ে গেছে। হঠৎ করে এমন ভয়াবহ ঝড় আমার জীবনে কখনো দেখিনি।
এই বিষয়ে সালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মাহবুবুর রহমান বলেন, ঝড়ের খবর পেয়ে সকাল আমি ঘটনা স্থল পরিদর্শন করি। তবে ঠিক কী পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এই বিষয়টি এখনও নির্ধারণ করা যায়নি। তবে বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।
তারাও ঘটনা স্থল পরিদর্শন করবে বলে জানায় এবং যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের প্রত্যেককে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ্য করে ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর আবেদন করতে বলেছি।