সাইদুল আনাম,দৌলতপুর প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় দৌলতপুরে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরানির প্যাকেটে বিরানির পরিবর্তে খেতে দিয়েছেন পাউরুটি আর বিস্কুট। উপজেলা থেকে এই রশিকতা আশা করেননি বীর মুক্তিযোদ্ধারা, চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। শনিবার দুপুর ১.৩০টায় দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের সম্বর্ধনা শেষে দুপুরে বিরানীর প্যাকেটে খাবার খেতে দিলে প্যাকেট খুলে তাতে দেখতে পান পাউরুটি আর একপিচ বিস্কুট। এতে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হোন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তামাসা করেছেন’।
বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ জানান, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১.৩০টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে বিরানীর প্যাকেটে পাউরুটি আর বিস্কুট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের শুধু অপমান করেননি দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ব্যক্তিরা পুরো জাতির সাথে তামাসা করেছে।
আহের আলী নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, ক্ষুধার কারনে বিরানীর প্যাকেট খুলে খেতে গিয়ে দেখি প্যাকেটে বিরানীর পরিবর্তে পাউরুটি আর বিস্কুট। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এবারের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান দায়সারা গোছের হওয়ার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার নিয়েও তামাসা করেছে দৌলতপুর ইউএনও। এটা আমারদের জন্য চরম লজ্বা ও অপমানের।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল জব্বারের কাছে মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি মিটিংয়ে আছি বলে ব্যস্ততা দেখিয়ে মোবাইল ফোন কেটে দেন। তবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত বরাদ্দের অর্থ দিয়ে সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব তা সম্মানের সাথে করা হয়েছে।
অপরদিকে দৌলতপুরে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে মহান স্বাধীনতা দিবস। ২৬ মার্চ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটি শুভ সূচনা হয়। উপজেলা প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে শহীদ বেদীতে দৌলতপুরের বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন আনুষ্ঠানিকভাবে পুষ্পস্থবক অর্পণ করতে পারেনি।
পুষ্পস্থবক অর্পণ করতে না পারার কারণ হিসেবে একাধিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের দাওয়াাত পত্রে পুষ্পস্থবক অর্পণ করার সময়সূচী হিসেবে সকাল ৬ টা বেজে ৩০ মিনিট থাকলেও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল জব্বারের নির্দেশক্রমে নির্ধারিত সময়ের অনেকটা আগেই শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ করা হয়।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের এই অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদস্বরূপ উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়েনের শেরপুর গ্রামে অবস্থিত একাত্তরের যুদ্ধক্ষেত্র নামে পরিচিত শহীদ হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক এর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্থবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করেন দৌলতপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের নেতৃবৃন্দ।