দৌলতপুর প্রতিনিধি : ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কুষ্টিয়া দৌলতপুরের বিভিন্ন বিপণিবিতানে জমে উঠেছে কেনাকাটা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বিকিকিনি। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে মার্কেটগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি তত বাড়ছে। দোকানিরা বলছেন, ১৫ রোজার পর থেকে এবার জমে উঠেছে ঈদ-কেন্দ্রিক কেনাকাটা।
গত দুই বছর করোনার কারণে নানা বিধিনিষেধ থাকায় আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারেননি দোকানিরা। এবার রাষ্ট্রীয় কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় এবং ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তারা বলছেন, ১৫ রমজানের পর থেকে বিক্রি বেড়েছে। শেষ দিকে বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।
বুধবার সরেজমিনে উপজেলার রেমি সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর থেকে মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় লেগে আছে। সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে কাপড় বিক্রি। ব্যবসায়ীরা জানান, দৌলতপুর উপজেলাতে ছোট-বড় প্রায় ৫৫টি মার্কেট রয়েছে। এখানে দোকানের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এসব দোকানে দেশীয় জামদানি, টাঙ্গাইল ও তাঁতের নতুন ডিজাইনের শাড়িসহ নারীদের বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে ধুমধারাক্কা। ফ্যাশনের পাশাপাশি ঐতিহ্যতেও গুরুত্ব দিচ্ছেন নারীরা। আর প্রচুর কালেকশনের পাশাপাশি দাম স্বাভাবিক থাকায় খুশি তারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র আল্লারদর্গার বিভিন্ন বিপণিবিতানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, এবার নারী ক্রেতাদের কাছে ঈদ বাজারের শুরুতেই আকর্ষণীয় পোশাক হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘কাঁচা বাদাম’ নামক থ্রি-পিস। অন্য দিকে বিক্রেতারা জানান, লাল, নীল, সবুজসহ ছয় রঙের থ্রি পিস রয়েছে কাঁচা বাদামের। আর কাপড়ের প্রকারভেদে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এ থ্রি-পিসগুলো।
বৃহঃবার সকালে তারাগুনিয়া সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন প্রতিবেদককে বলেন, গত দুই বছর ব্যবসায়ীরা এক প্রকার সংকটকাল কাটিয়েছে। দুই বছরের স্থবিরতা কাটিয়ে এবার ব্যবসা কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। এবার রমজানের শুরু থেকে ঈদের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। ঈদ পর্যন্ত এ ভাব বজায় থাকবে বলে আশা করছি।
রেমি সুপার মার্কেটের তৃপ্তি গার্মেন্টস এর মালিক সমেদ আলী শামিম বলেন, আমাদের মার্কেটে ঈদের বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে এখনও পুরোদমে জমে ওঠেনি। ২৫ তারিখের পর থেকে পুরো দমে বিক্রি জমে উঠবে বলে আশা করছি। করোনার কারণে দুই বছর তেমন বিক্রি হয়নি। করোনা-পরবর্তী সময়েও যেভাবে বিক্রি হবে আশা করেছিলাম সেভাবে হয়নি। কারণ এখন দোকানপাট বেড়ে গেছে, অনলাইনে ব্যবসা বেড়ে গেছে। সেজন্য কাস্টমার কিছুটা কম মনে হচ্ছে আমার কাছে। করোনার আগে প্রচুর বিক্রি হতো। কারণ ওই সময় অনলাইনে এত ব্যবসা ছিল না।
করোনার বিধিনিষেধ না থাকায় এবার মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাইও নেই বললেই চলে। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। তাছাড়া সামাজিক দূরত্ব মানার ন্যূনতম প্রবণতাও তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়নি। দুএকজন মাস্ক পড়লেও অনেকের মাস্কই সঠিকভাবে পরা ছিল না।
দৌলতপুর থানার ওসি জাবিদ হাসান বলেন, মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদের কেনাকাট করতে পারে এ জন্য আমরা প্রস্তত রয়েছি। দৌলতপুরের সকল বাজারে প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পুলিশের একটি টিম দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া থানার অন্যান্য বাজারেও পুলিশের টহল টিম রয়েছে।