মো. সাইদুল আনাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার অনাবাদি চরে চিনা বাদাম চাষ করে চাষীরা এবছরও ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে চাষকরা সোনালী ফসল বাদাম ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অর্থকারী এ ফসল চাষ করে সংসারে স্বচ্ছলতাও ফিরেছে চরবাসির।
চলতি রবি মৌসুমে দৌলতপুরের পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে ৮৯০ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। একসময় পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা বালুচর পড়ে থাকতো। যা চাষীদের কোন কাজেই আসতো না। এখন জেগে ওঠা পদ্মার চরে চাষীরা চিনা বাদাম চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ায় প্রতিবছরই বাদাম চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে অর্থকারী এ ফসলের চাষ পুরো চরে ছড়িয়ে পড়ছে। এবছরও চরে বাদাম চাষ করে চাষীরা ব্যাপক সাফল্য পাচ্ছেন। খরচ বাদ দিয়ে চাষীদের লাভের অংক তিনগুন থেকে চারগুন ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ৫-৬ হাজার টাকা। আর বিক্রয় হচ্ছে ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০টাকা মণ দরে। খরচ কম, অল্প পরিশ্রমে লাভও বেশী। তাই চাষীরা বাদাম চাষে চরম খুশি।
চিলমারীর চরের আইয়ুব আলী নামে এক কৃষক জানান, এবছর ৫বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। বিঘাপ্রতি তার খরচ হয়েছিল ৫ হাজার টাকা করে। খরচ বাদ দিয়ে বর্তমান বাজার দরে বিঘাপ্রতি প্রায় ১৫ হাজার টাকা করে লাভ হচ্ছে। অপরদিকে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুন্সগঞ্জ এলাকার কৃষক আব্দুল জব্বারও একই কথা জানিয়েছেন। এছাড়াও মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর গ্রামের বাদাম চাষী হাবিবুর রহমান জানান, এবছর ৫ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে বেশ লাভবান হওয়ায় আগামী বছর দ্বিগুন জমিতে বাদাম চাষ করার ইচ্ছা রয়েছে। এদিকে বাড়ির গৃহস্থালির কাজ শেষে বাদাম ক্ষেতে কাজ করে মৌসুমী দিন মজুররাও খুশি। তারাও কৃষকের বাদাম ক্ষেতে গাছ থেকে বাদাম ঝরিয়ে প্রতিদিন আয় করেছেন ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা।
কৃষি বিভাগ থেকে বাদামের নতুনজাত সরবরাহসহ কারিগরি পরামর্শ প্রদান ও সবধরণের সহায়তার দেওয়ার ফলে বাদামের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে ও চাষীরা অধিক লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নুরুল ইসলাম।।
চরাঞ্চলের পড়ে থাকা অনাবাদি জমিতে অর্থকারী সোনালী ফসল বাদাম চাষের আওতায় আনা গেলে চরবাসীর সারাবছরের আর্থিক চাহিদা পুরণে সহায়ক হবে, পাশাপাশি দেশের বাদামের চাহিদা মিটবে বলে সংশ্লিষ্টরা এমনটাই মনে করেছেন।