দৌলতপুর প্রতিনিধি :কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়ীয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রুস্তুম আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এটা গ্রাম বাসির নিজ অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত । ঐ সময় হতে বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ রুস্তম আলীকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তার দাখিলকৃত সার্টিফিকেট জাল হওয়ায় তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকাবাসী ১৯৯৭ সালে উক্ত পদ হতে তাকে বহিষ্কার করেন এবং ২০০১ ইং সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি’র স্থানীয় নেতাবর্গ এমপি মহোদয়ের সহযোগীতায় তাকে বিদ্যালয়ের উক্ত পদে বহাল রাখে। এই কারনে এলাকার সাধারণ জনগণ ও কমিটির সদস্যগণ প্রতিবাদ করলে দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে কমিটিসহ সাধারণ জনগণের নামে মামলা মোকাদ্দমা করে এবং হয়রানি করে। উক্ত ক্ষোভে তৎকালীন সময় হতে স্থানীয় জনগণ বিদ্যালয়ের দায়-দায়িত্ব ছেড়ে দিলে উক্ত প্রধান শিক্ষক তার নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী নিয়মিত কমিটি ছাড়া বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আসছে। ২০১৯ সালে প্রধান শিক্ষক রুস্তম আলী তার মনগড়া পকেট কমিটি তৈরি করলে উর্ধতম কর্তৃপক্ষ তা স্থগিত করে দেয়। পরবর্তিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সরদার মোঃ আবু সালেক সহ কয়েকজনের নামে আদালতে মামলা করেন , প্রধান শিক্ষক রুস্তম আলী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বীকৃতি নবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালে স্বীকৃতি নবায়নের জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা বোর্ড ২০০৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদ্যালয়ের অস্থায়ী স্বীকৃতি নবায়ন করে। এরপর বোর্ডের শর্ত পূরণ না করায় স্বীকৃতি স্থগিত হয়ে যায়। এর পর থেকে বোর্ডের স্বীকৃতি ছাড়াই (১৭) সতের বছর বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে।
২০০২ সালে বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হলেও অদ্যবদি এখনোও পর্যন্ত এডহক কমিটি দ্বারা বিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এডহক কমিটি থাকার কোন নিয়ম আছে কিনা এ ব্যাপারে ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রুস্তম আলী-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন-না থাকতে পারেনা বলে জানান, বর্তমানে একটি মামলা আছে যার কারনে নিয়মিত কোন কমিটি হচ্ছেনা।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সরদার মোঃ আবু সালেক বলেন, শুধু নিয়মিত কমিটিই না ঐ বিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নবায়ন নাই ২০০৬ সালের পর থেকে, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ সালে এডহক কমিটিরও মেয়াদ শেষ। মামলার বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন প্রধান শিক্ষক রুস্তম আলী প্রচুর মিথ্যার অশ্রয় নেয়, আমার নামে মামলা করেছিলো যার রায় আমার পক্ষে এসেছে। এখন কোন মামলা নাই।
স্বীকৃতিবিহীন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের অনুমতি ও বোর্ডের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিধান না থাকলেও মানবিক দিক বিবেচনায় ফরম পূরণের সুযোগ দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল জব্বার বলেন, ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুস্তম আলীর খুঁটির জোর কোথায় সেটা আমি খতিয়ে দেখছি, তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন এই কর্মকর্তা।
অভিযোগ আছে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকাল হতে এ পর্যন্ত সকল সরকারী অনুদান সে নিজে আত্বসাৎ করে আসছে। তার দুর্নীতির কারনেই এ যাবৎ পর্যন্ত উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এই বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টি কোনদিনই সঠিক ভাবে পরিচালনা করেনি প্রতিষ্ঠান প্রধান। অধিকাংশ দিনই প্রধান শিক্ষক মোঃ রুস্তম আলী বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। যার কারনে সহকারী শিক্ষকরাও নির্দৃষ্ট সময়ে স্কুলে আসেনা।
বিদ্যালয়ের সাথে জড়িত সুশিল ব্যাক্তিরা আক্ষেপ করে বলেন, যে প্রধান শিক্ষক মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে যুগ যুগ ধরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্বীকৃতি নবায়ন না করে সরকারকে ফাকি দিতে পারে সেই শিক্ষকের নিকট ভালো কিছু আশা করা যায়না। তারা উপজেলা প্রশাসন ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের সদয় সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
সম্পাদক : খন্দকার জালাল উদ্দিন
সম্পাদকীয় কার্যালয়: খন্দকার সুপার মার্কেট , (২য় তালা ) আল্লারদর্গা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ।
মোবাইল : ০১৭১৮-১৬৪২৬৬, ই-মেইল: uddinjalal030@gmail.com
ই-পেপার কপি