খন্দকার জালাল উদ্দীন : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে চিলমারী ইউনিয়নের চিলমারী গ্রামে ২ মে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বসতঘরে পেট্রোল বোমার আগুন ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে দিনু মন্ডল ও আকতার মন্ডল নামে দুইজনের মৃত্যুও পর দিনু ছেলে ফারুক(২৫) মারা গেছে।
নিহত আকতার মন্ডল (৪০) চিলমারী গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে এবং দিনু মণ্ডল (৬৫) একই গ্রামের দবির মণ্ডলের ছেলে। ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার (৩০ এপ্রিল) সকালে আক্তার মন্ডল এবং একইদিন রাতে দিনু মন্ডল মারা যান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে চিলমারীতে তাদের মরদেহ এসে পৌঁছানোর পর নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।
সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। এর পর ঘরবাড়িতে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বাবার পর মারা গেল তাঁর ছেলে ফারুক মন্ডল (২৫)।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ ৬ জনের মধ্যে ৪ মে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে মারা যান নিহত দিনু মন্ডলের ছেলে ফারুক মন্ডল।
এর আগে গত রবিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আক্তার মন্ডল (৪০) এবং একইদিন রাতে দিনু মন্ডলের (৬৫) মারা যান।
দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান ফারুক মন্ডলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি বলেন, চিলমারীর ঘটনায় আরও একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালে মারা গেছেন। এ নিয়ে ঐ ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হলো। ওসি আরো জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
তবে, স্থানীয়রা জানান, রাতের আধারে কে বা কারা মুখে কাপড় বেধে এসে বাড়িঘর থেকে গরু-ছাগল খুলে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে তারা চরম উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল বেলা ৩ টার দিকে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চিলমারী বাজারপাড়ায় একটি রাস্তার জমিসংক্রান্ত বিরোধ কে কেন্দ্র করে স্থানীয় মন্ডল গ্রুপের লোকজনের ওপর হামলা ও বসতঘরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন।
এ সময় ৬ জন দগ্ধ সহ ১৬ জন আহত হয়। দগ্ধ ৬ জনের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ এপ্রিল ২ জন মারা যায়।
গত ২৮ এপ্রিল (শুক্রবার) দুপুরে মোজাম মন্ডল বাদী হয়ে ৭৩ জনের নামসহ উল্লেখ সহ শতাধিক ব্যাক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাতে ১৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ও থানা পুলিশ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।