খন্দকার জালাল উদ্দীন : কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়ন এক আতঙ্কের জনপদে রুপ নিয়েছে। রাত নামলেই লুটপাট হচ্ছে চিলমারী গ্রামটিতে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম খান ও রাশিদুল ইসলাম শিকদার বলেন মন্ডল বংশের লোকজন সাথে আমাদের শিকদার ও খান বংশের লোকজন প্রায় দুই মাস যাবত বিবাদ চলে আসছে। দুই মাসে প্রায় ছোট বড় সংঘর্ষে ৬ টি মামলা হয়েছে দৌলতপুর থানায়। গত ২৫ রমজান এম পি সরওয়ার জাহান বাদশাহ'র বাড়িতে সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান সাক্কির আহমেদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনালী খাতুন আলেয়া সহ উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতে সালিশি বৈঠক হয়।
ইফতারীর কারনে বিরতি দিলে মন্ডল পক্ষের নেতৃত্ব দানকারী চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মন্ডলদের নিয়ে চলে যায়। চলে গিয়ে চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে আমাদের উপর দফায় দফায় হামলা চালায় এবং চিলমারী বাজারে আমাদের শিকদার ও খানদের লোকজন কে তাড়িয়ে দেয়। আমরা ঈদের বাজার টা প্রর্যন্ত করতে পারিনাই। আমরা কোন প্রকার গ্যাঞ্জাম করতে চাই নাই, আমাদের দেওয়ালে পিট ঠেকে গেলে আমাদের লোকজনের সাথে মন্ডলের লোকজনের সংঘর্ষ হয়। উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেক লোকজন গুরুতর আহত হয়। আগুন লাগার কারনে মন্ডল গ্রুপের ৩ জন মারা য়ায়। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। এই ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে আমাদের লোকজনেরা বাড়িঘর ছাড়া।
আমরা বাড়ি ঘরে না থাকার সুযোগে চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে মন্ডল গ্রুপের লোকজন প্রতিরাতে আমাদের ও আমাদের আত্মীয় স্বজনদের বাড়িঘরে লুটপাট করেছে । আমাদের শুধু না আমাদের আত্মীয় স্বজন হলেই তাদের ও রেহাই নাই। তাদের গরু ছাগল ও বাড়ি ঘরের মালামাল লুটপাট করে নিচ্ছে। রাত নামলেই মনে হচ্ছে চিলমারী লুটের রাজ্যে পরিণত হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
লুটপাট হয়ে যাওয়া বাড়ির মালিক,জাহাঙ্গীর শেখ, শহীদ শেখ, সিরাজ শিকদার, মুঞ্জিতল খা ,বশির, শিপন শিকদার, মসলেম শিকদার, সালাম শিকদার, হাফিজুর খা , লৎফর খা . রুহুল আমীন,ছাহোর ব্যাপারী, নূরু মোল্লা, জমির মোল্লা,মমিন খা, হাজ্জিত খা, হানাবাদ খা, বাচ্চু খা, মোশাররফ শেখ ,কুদ্দুস শেখ, রহিম শিকদার সহ আর অনেক বাড়ি লুটপাট হয়েছে গত ছয় দিনে । সর্বশেষ ৫ তারিখ রাতে আওয়াল খা, মুন্না দোকানদার, আমেনা দর্জীর বাড়ি লুটপাট হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে লুট হওয়া পরিবারে সদস্য জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মানসুরা ও শহিদ শেখের স্ত্রী সেফালি বলেন, পুলিশ পাহারা অবস্থায়, আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ মাঝরাতে মন্ডলদের লোকজন আমাদের মারপিট করে গরু সহ বাড়ির উল্লেখযোগ্য মালামাল নিয়ে যায়। আমরা তো কোন মারামারি করি নাই, তাহলে আমাদের মালামাল লুট করবে কেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসী নানা প্রশ্ন তুলেছে, অদৃশ্য কারণে পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করছে।
এ বিষয়ে আমরা থানা পুলিশের সহযোগিতা নিতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বাঁধা প্রদান করে থানায় যেতে দেয় নাই। আমাদের মালামাল ও গরু উদ্ধার সহ সঠিক বিচার দাবি করছি।
চিলমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে এটা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমার নেতৃত্বে কোন কিছু হচ্ছে না, আমি এর সাথে সম্পৃক্ত না।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন আছে। তবে সেখানে কোন ব্যক্তি যদি লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক : খন্দকার জালাল উদ্দিন
সম্পাদকীয় কার্যালয়: খন্দকার সুপার মার্কেট , (২য় তালা ) আল্লারদর্গা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ।
মোবাইল : ০১৭১৮-১৬৪২৬৬, ই-মেইল: uddinjalal030@gmail.com
ই-পেপার কপি