খন্দকার জালাল উদ্দীন : কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়ন সংঘর্ষের দুই মাস অতিবাহিত হলেও বন্ধ হয় নাই চুরি ও লুটপাট ।
২৭ জুন মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় চিলমারীর লুটপাট হওয়া ঘরবাড়ি ও সংঘর্ষে নিহতদের বাড়ি পরিদর্শন করেন কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য আ.কা.ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ।
এ সময় তার সফর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরিফ উদ্দিন রিমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহম্মেদ মামুন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনালী খাতুন আলিয়া সহ আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। উপস্থিত ছিলেন দৌলতপুর থানা অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম।
লুটপাট হয়ে যাওয়া বাড়ির মালিক ওয়াজেদ আলী খাঁর স্ত্রী আলেকা, সিদ্দিক আলমের স্ত্রী মুক্তি, সিদ্দিক খাঁর স্ত্রী নারগিস, আবু তালেব খার বোন আনোয়রা, রাসেদা,আলেকা, নাজমা, তারাভানু,বাক্কার শিকদারের স্ত্রী আলেয়া বলেন, মন্ডল বংশের লোকজন সাথে শিকদার ও খান বংশের লোকজন প্রায় দুই মাস যাবত বিবাদ চলে আসছিল।
দুই মাসে প্রায় ছোট বড় সংঘর্ষে ৬ টি মামলা হয় দৌলতপুর থানায়। গত ২৫ রমজান এম পি সরওয়ার জাহান বাদশাহ'র বাড়িতে সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান সাক্কির আহমেদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনালী খাতুন আলেয়া সহ উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতে সালিশি বৈঠক হয়।
ইফতারীর কারনে বিরতি দিলে মন্ডল পক্ষের নেতৃত্ব দানকারী চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মন্ডলদের নিয়ে চলে যায়। চলে এসে মন্ডলরা দফায় দফায় হামলা চালায় এবং চিলমারী বাজার থেকে শিকদার ও খাঁনদের লোকজন কে তাড়িয়ে দেয়। ঈদের বাজার টা প্রর্যন্ত করতে পারেনাই লোকজন। কোন প্রকার গ্যাঞ্জাম করতে চাই নাই সাধারন লোকজন। দেওয়ালে পিট ঠেকে গেলে শিকদার ও খাঁন দের সাথে মন্ডলের লোকজনের সংঘর্ষ হয়।
উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেক লোকজন গুরুতর আহত হয়। আগুন লাগার কারনে মন্ডল গ্রুপের ৩ জন মারা য়ায়। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। এই ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে শিকদার ও খান দের লোকজনেরা বাড়িঘর ছাড়া হয় ।
বাড়ি ঘরে না থাকার সুযোগে মন্ডল গ্রুপের সন্ত্রাসীরা আমাদের সহ আমাদের আত্মীয় স্বজনদের বাড়িঘরে লুটপাট করেছে । আমাদের শুধু না আমাদের আত্মীয় স্বজন হলেই তাদের আর রেহাই নাই।
আমাদের ও আত্মীয়-স্বজনদের গরু ছাগল ও বাড়ি ঘরের মালামাল লুটপাট করে নিচ্ছে তারা । সংঘর্ষের দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত আমরা এলাকায় আসতে পারি নাই। প্রতিদিনই আমাদের কোন না কোন বাড়িতে হচ্ছে লুটপাট । রাত নামলেই মনে হচ্ছে চিলমারী লুটের রাজ্যে পরিণত হচ্ছে। আমরা জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য আ.কা.ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ বলেন, এই ধরনের অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ড আমরা কখনো মেনে নিতে পারি না। এটা একটা জঘন্য অপরাধ। এর সঠিক বিচার হবে। কিন্তু যারা এজাহার দাখিল করেছে তারা আসামী ছাড়া বহু লোককে প্রতিহিংসামূলক আসামি করেছে। এতে মামলাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি হয়েছে। সঠিক তদন্ত হবে যারা এ হত্যা এবং অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত তাদের কঠোর বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।
তবে ঘটনা হলো এপ্রিল মাসের ২৭ তারিখে। তার জন্য আমরা সবাই শোকাহত। কিন্তু তাই বলে পুরা মে মাস ও জুন মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে আপনারা লুটতরাজ চালাবেন। যারা নিরীহ লোক মারামারির ভিতরে নাই তাদের বাড়িতে লুটতরাজ করবেন। একটা ডাকাত গোষ্ঠী এই সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের বাড়ি ঘরের লুটতরাজ করছে। প্রতি রাতে কোন না কোন ঘটনা ঘটছে। একটা কথা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, চিলমারী ইউনিয়ন চোর ডাকাতদের কাছে লিজ দেওয়া হয়নাই। আর যদি চুরি ও লুটপাট হয় তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সম্পাদক : খন্দকার জালাল উদ্দিন
সম্পাদকীয় কার্যালয়: খন্দকার সুপার মার্কেট , (২য় তালা ) আল্লারদর্গা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ।
মোবাইল : ০১৭১৮-১৬৪২৬৬, ই-মেইল: uddinjalal030@gmail.com
ই-পেপার কপি