মো. সাইদুল আনাম, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কামাল হোসেন নামে একজন সরকারী কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয়ে চাকুরী নিয়ে ইউএনও পদে কর্মরত থাকার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছেন ৩জন সাংবাদিক। এসময় ভাংচুর করা হয়েছে সাংবাদিকের ভিডিও ক্যামেরা।
এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় মামলা হলে দৌলতপুর থানা পুলিশ হামলায় জড়িত ২জন আসামীকে গ্রেফতার করে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে প্রেরণ করেছেন। হামলায় আহত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের কুষ্টিয়ার স্টাফ রিপোর্টার শরীফ উদ্দিন বিশ্বাস (৪৪), ক্যামেরা পার্সন এস আই সুমন (৩৮) ও তাদের সহযোগি আহসান হাবিব বিদ্যুৎ (২৬)।
হামলার মামলা সূত্রে জানাগেছে, দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের সিরাজনগর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মো. কামাল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রশাসনিক ক্যাডারে চাকুরী নিয়ে বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে খুলানায় কর্মরত আছেন।
তিনি তার চাচা মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল্লাহ লালুর মুক্তিযোদ্ধা সনদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারী কর্মকর্তা পদে চাকুরী পান। ঘটনাটি জানার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের কুষ্টিয়ার স্টাফ রিপোর্টার শরীফ উদ্দিন বিশ্বাসসহ ৩জন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যান।
দুপুর আড়াইটার দিকে সংবাদ এবং তথ্য সংগ্রহ ও ভিডিও ধারণকালে আহসানুল্লাহ লালুর নেতৃত্বে ৮-১০জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে হামলা চালায়। এসময় হামলাকারী সন্ত্রাসীরা ৩ সাংবাদিককে লাঠি সোঠা দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে আহত ও ভিডিও ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভাংচুর করে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধ সাংবাদিকদের উদ্ধার করলে স্থানীয় সাংবাদিকের সহায়তায় তাদের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে আহত সাংবাদিক শরীফ বিশ্বাস বাদী হয়ে হামলায় জড়িত ৫জনের নাম উল্লেখ সহ ৮/১০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন যার নং-৩০। মামলা দায়ের পর দৌলতপুর পুলিশ সিরাজনগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহার নামীয় দুই আসামী আহসানুল্লাহ লালুর ছেলে শিপন (৩৬) ও মোসতাকের ছেলে মো. মঞ্জু (৩৫) কে গ্রেফতার করে।
এদিকে সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কুষ্টিয়া ও দৌলতপুরের সাংবাদিকরা বৃহস্পতিবার রাত ১০ পর্যন্ত দৌলতপুর থানায় উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এসময় সাংবাদিকরা হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী জানান।
সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা মামলার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, হামলা মামলার ৪ ও ৫ নম্বর এজাহার নামীয় আসামী গ্রেফতার হয়েছে। বাঁকী আসামীদের গ্রেফতার অভিযান চলমান রয়েছেন।