খন্দকার জালাল উদ্দীন : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে রিফাইতপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে লটারী করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করায় প্রার্থীরা সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি।
শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে সমসংখ্যক ভোট প্রাপ্ত প্রার্থীতের অনুপস্থিতিতে এ লটারী করা হয়। লটারীতে ঘোড়া প্রতিকের প্রার্থী মো. আব্দুল মান্নান বিশ্বাস রানা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। এসময় জেলা নির্বাচন অফিসার আবু আনছার, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওবায়দুল্লাহ ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার অঞ্জন কুমার মন্ডল সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রার্থীতের অনুপস্থিতিতে লটারী পরিচালনা করেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার অঞ্জন কুমার মন্ডল। তবে লটারীর মাধ্যমে চেয়ারম্যান নির্বাচন প্রক্রিয়া মেনে না নিয়ে পুনরায় ভোট গননার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ফারুক আলম পান্না।
(১০ মার্চ) রোববার দুপুর ১২ টায় মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ফারুক আলম পান্না রিফাইতপুর বাজারে তার নির্বাচনী অফিসে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তিনি লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর মধ্যে সমসংখ্যক ভোট প্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে পুনরায় ভোট হবে বলে ঘোষনা দেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার মন্ডল।
কিন্তু রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আমার মোবাইল ফোনে ফোন করে রাত ১০:১০ মিনিটে লটারি হবে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার মন্ডল। তার কিছু সময় পরে আমার বাড়ীতে তিন গাড়ী পুলিশ পাঠানো হয়। সে সময় আমার নেতা কর্মীরা অনেক ভয় পায়। পরে আমি আমার নেতা কর্মীদের নিয়ে নির্বাচন অফিসে গিয়ে দেখি আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আব্দুল মান্নান বিশ্বাস রানা সেখানে আসেনি।
তবে ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর যে নির্বাচনী আইন পাশ হয়েছে সেই আইনের বিধি ৪১ এর (ক) ও (খ) ধারা মোতাবেক লটারির যে বিধান রয়েছে সেখানে বলা আছে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী এবং তাদের এজেন্টগনের সামনে লটারি করা ও তাদের স্বাক্ষর করার কথা লেখা আছে।
যেহেতু আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী সেখানে উপস্থিত নাই তাই আমি রাত ১ টার দিকে লটারি না করে সেখান থেকে বের হয়ে আসি। পরে আমি জানতে পারি লটারির মাধ্যমে আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আব্দুল মান্নান বিশ্বাস রানাকে বিজয়ী করেছে তাই আমি আইনের আশ্রয় নিবো।
উল্লেখ্য গত বছরের ১৪ অক্টোবর রিফাইতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বাবলুর মৃত্যুতে চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হওয়ায় গত শনিবার (৯ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ ও ভোট গননা শেষে দুই প্রার্থী সমান সংখ্যক ভোট পাওয়ায় নির্বাচন বিধি অনুযায়ী এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রতিদ্বন্দ্বি দুই প্রার্থীরা হলেন মো. আব্দুল মান্নান বিশ্বাস রানা।
তিনি ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোট পেয়েছেন ৬১২৩ ভোট। অপরদিকে মো. ফারুক আলম পান্না মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনিও পেয়েছেন ৬১২৩ ভোট। ফলে দুই প্রার্থী সমান সংখ্যক ভোট পাওয়ায় গভীর রাতে লটারী করে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা দেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার মন্ডল।