খন্দকার জালাল উদ্দীন : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে তীব্র তাপদাহে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। সেই সাথে বৈশাখের এই খরতাপে কৃষকের ফসল পুড়ে হচ্ছে নষ্ট। এর ফলে বাড়তি সেচে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। তারপরও ফলন বিপর্যয় নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
কৃষক ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, তীব্র তাপদাহ ও খরতাপে কৃষকের ফসল পুড়ে নষ্ট হচ্ছে। আর ক’দিন পরেই অর্থকরী সোনালি ফসল বাদাম চরাঞ্চলের কৃষকদের ঘরে তোলার কথা। কিন্তু তীব্র খরায় বা প্রখর রৌদ্রে চরাঞ্চলের বাদাম ক্ষেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে। সেচ দিয়েও খুব একটা কাজে আসছেনা। একই অবস্থা সোনালি আঁশ পাটবীজ বপন করে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সেচ দিয়েও খুব একটা কাজে আসছেনা। স্যালো ইঞ্জিন দিয়ে সেচ দিতে না দিতেই তীব্র খরায় শুকিয়ে যাচ্ছে ক্ষেত।
এতে বাড়ছে কৃষকের উৎপাদন খরচ। প্রকৃতির বিরূপতায় কৃষিকাজ হচ্ছে চরমভাবে ব্যাহত। বৈরী আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে বিপর্যয় ঘটবে কৃষিতে।
কৃষকরা বলছেন, এপ্রিলের তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। চলতি মৌসুমে বাদামের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ার আশা ছিল তাদের। কিন্তু তীব্র তাপদাহের কারণে লাভের পরিবর্তে লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর, রামকৃঞ্চপুর, মরিচা ও চিলমারী ইউনিয়নে পদ্মার জেগে উঠা বিস্তীর্ণ চরে অর্থকরী ফসল বাদামের চাষ হয়ে থাকে। এবার তীব্র খরা ও তাপদাহে বাদামের গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। সেচ দিয়েও খুব একটা কাজে আসছে।
ফিলিপনগর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, গত বছরে বাদামে ভালো লাভ হয়েছিল। সেই আশায় এবারও ৫ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। তীব্র রোদ আর তাপমাত্রায় বাদাম গাছ শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। সেচ ব্যবস্থা না থাকায় বাদাম গাছ পুড়ে নষ্ট হচ্ছে। একই অভিযোগ ইসলাপুর গ্রামের কৃষক মানিক হোসেনের। এ বছর তিনি ২৬ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন।
প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম চাষে তার খরচ হয়েছিল ১৭ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা। অতিরিক্ত খরার কারণে প্রায় ৮ বিঘা জমির বাদামগাছ পুড়ে একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সোলাইমান হোসেন নামে অপর এক বাদাম চাষি জানান, এ বছর ৮ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। অতিরিক্ত খরার কারণে ক্ষেতের সব বাদাম পুড়ে গেছে। এলাকায় এ বছরে বৃষ্টি নাই, সেচ দিয়ে বাদাম রক্ষা করাও সম্ভব হচ্ছে না। অতিরিক্ত রৌদ্রের তাপে সব নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি পোষাতে সরকারি সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
দৌলতপুর কৃষি অফিসার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এ বছর দৌলতপুরে ৮১৮ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। তীব্র তাপদাহের কারণে বাদাম চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে আগামীতে সেচ ব্যবস্থা রেখে কৃষকদের বাদাম চাষ করার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রকৃতির বিরূপতায় কৃষির উৎপাদন বিঘ্ন হলে বিপর্যয় ঘটবে কৃষিতে। ফলে সংকটে পড়বে কৃষক।
সম্পাদক : খন্দকার জালাল উদ্দিন
সম্পাদকীয় কার্যালয়: খন্দকার সুপার মার্কেট , (২য় তালা ) আল্লারদর্গা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া ।
মোবাইল : ০১৭১৮-১৬৪২৬৬, ই-মেইল: uddinjalal030@gmail.com
ই-পেপার কপি