স্টাফ রিপোর্টার :পুলিশ ও ক্ষমতাশালীদের বিরুদ্ধে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পরিবারে কুষ্টিয়া কুমারখালি উপজেলার কয়া ইউনিয়নের উত্তর কয়া গ্রামের মোঃ সামছুদ্দিনের ১২ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট মোঃ জাফর ইকবাল, উচ্ছল প্রাণবন্ত ২৬বছরের এক টকবকে যুবক।
জাতীয় পর্যায়ে এ্যাথলেটিক্সে নাম লিখিয়েছিলেন ভারোত্তোলনে।২০১৫সালের ১০নভেম্বর রাতে হটাৎই সাদা পোশাকে পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন তুলে নিয়ে যায় সদ্য বিবাহিত যুবক জাফর ইকবালকে,সেই থেকে নিখোঁজ তিনি,
দীর্ঘ ৯টি বছর তার পথ চেয়ে বসে আছে মা-বাবা, ভাই -বোন।নিখোঁজের পরের দিন সকালে কুমারখালি থানায় উপস্থিত হয়ে তার সন্ধান চাইলে পরিবারের সদস্যদের পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে,থানার কোনো পুলিশ সদস্য জাফর ইকবালকে তুলে আনেনি,
এমনকি নিখোঁজ জাফরের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে নি থানা পুলিশ উপায়ন্তর না পেয়ে পিকলু,নয়ন,বিপ্লব,নাসির ও সেলিম মন্ডলকে আসামী করে কুষ্টিয়া কোর্ট মামলা করে পিতা সামছুদ্দিন। এবিষয়ে নিখোঁজ জাফরের পিতা মোঃ সামছুদ্দিন বলেন, আমার ছেলে জাফরকে ১৫ই নভেম্বর ২০১৫সালে রাতে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়, আমরা বাঁধা দিতে গেলে অস্ত্র ধরে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয় এবং বলা হয় কেনো ধরে নিয়ে যাচ্ছি তা সকালে থানায় গেলে জানতে পারবে,কিন্তু পরদিন সকালে কুমারখালি থানায় ছেলের খোঁজ করতে গেলে পুলিশ বলে আপনার ছেলেকে পুলিশ ধরেনি,
এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে থানা পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেনি।কারা কারা জাফরকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে, ৯বছর ধরে সন্তানের ফিরে আসার পথপানে চেয়ে থাকা পিতা কান্না বিজরীত কন্ঠে বলেন,তৎকালীন কুমারখালি থানার এসআই রাজিব,
এসআই গৌতম এবং তাদের সাথে ছিলো একই গ্রামের নাসিরউদ্দিনের ছেলে পিকলু,মজিবর মন্ডলের ছেলে সেলিম মন্ডল সহ বেশ কয়েকজন। এদিকে জাফরের রহস্য জনক নিখোঁজের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন চান এলাকাবাসী,স্থানীয় বাসিন্দা মধু বিশ্বাস,
শাহিনুর রহমান,বিকাশ চক্রবর্তী, পরিমল বিশ্বাস সহ বেশ কয়েকজন বলেন,পরদিন সকালে আমরা জানতে পেরেছি জাফরকে পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন তুলে নিয়ে গেছে, জাফর একজন ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলো,বর্তমানে দেশে নিরপেক্ষ সরকার দায়িত্ব পালন করছেন এখন অতীতের অনেক গুম হওয়া মানুষ ফিরে আসছে,আমরা আশাকরি জাফর ফিরে আসবে,আর তার সাথে খারাপ কিছু ঘটলে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের উপযুক্ত বিচার কামনা করছি। অন্য দিকে নিখোঁজ জাফরের বড়বোন এ্যাডঃ রুপালী খাতুন বলেন,
আমার ভায়ের নিখোঁজের পর আমরা কুষ্টিয়া কোর্টে একটি মামলা করি,মামলা নং ১৪৯/১৫,মামলাটি বর্তমানেও চলমান আছে।তিনি মামলার তদন্তে অনিয়ম হয়েছে দাবী করে বলেন, এই মামলাটি প্রথমে তদন্তের দায়িত্ব পালন করেন এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত এসআই গৌতম, তিনি সকল আসামিদের পক্ষ নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট জমাদেন,
পরবর্তীতে আমরা তদন্ত রিপোর্টে আদালতে না রাজি জানালে আবারও তদন্তকারী পরিবর্তন করা হয়,কিন্তু তদন্তে যেই আসুক তারা প্রথম তদন্তের রিপোর্টকে ভিত্তি করে মনগড়া রিপোর্ট জমা দেয়,সর্বশেষ গত ২৮-০৮-২০২৩ইং তারিখে ডিবি পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়, এবারে ও অসম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা দেয় তারা,এতে উল্লেখ করা হয় জাফর নিহত হয়েছে, কিন্তু কারা এবং কেনো জাফরকে হত্যা করলো তারা কোনো বিবরণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় নি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা আশাকরি স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবে। এদিকে স্থানীয় একটি সুত্র জানিয়েছে, নিখোঁজ জাফর ইকবালের সাথে ববি নামের এক তরুণীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো সেই সুত্রধরে নিখোঁজের প্রায় ১মাস আগে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়,সুত্রের দাবী ববি জাফরকে বিবাহ করলেও স্থানীয় পিকলু নামের যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে, মূলত পরকীয়ার জেরেই জাফরের নিখোঁজের ঘটনা ঘটে।এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায় নি। (আরও বিস্তারিত আসছে)