খন্দকার জালাল উদ্দীন : নাসির উদ্দিন বিশ্বাস,একজন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও দেশ বরেণ্য শিল্পপতি মরহুম নাসির উদ্দিন বিশ্বাস ১৯৪৫ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারী কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার সোনাইকুন্ডি গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাহার পিতা ইদ্রিস আলী ও মাতা মোছাঃ রহিমা বেগম। তিনি ১৯৬৭ সালে হোগলবাড়ীয়া মাধমিক বিদ্যালয় থেকে এস,এস,সি পাশ করেন। ১৯৬৯ সালে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ থেকে এইচ,এস,সি এবং ১৯৭১ সালে একই কলেজ থেকে বি,কম পাশ করেন।
১৯৭১ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে নাসির উদ্দিন দ্বিতীয়। কৃষি কাজের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু। ১৯৭২ সালে তিনি তামাক ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে নাসির বিড়ি ফ্যাক্টরী গড়ে তোলেন। ১৯৭৭ সালে কুষ্টিয়া বিসিক শিল্প নগরীতে নর্থবেঙ্গল প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ মেলামাইন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ১৯৯৬ সালে নাসির টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ, ২০০০ সালে রিড্রাইং প্লান্ট ও বিশ্বাস প্রিন্টং ও প্যাকেজেস লিমিটেড এবং ২০০২ সালে নাসির গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ নামে মোট ৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
জনহিতকর কাজের মধ্যে ১৯৮৮ সালে আল্লারদর্গায় নাসিরউদ্দিন গার্লস মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং ২০০২ সালে তা কলেজে উন্নীত করেন। ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর কুষ্টিয়ার ১০০ জন করে ছাত্র ছাত্রীকে বৃত্তি প্রদান করে আসছেন। ১৯৯১ সালে স্ত্রীর নামে আনোয়ারা বিশ্বাস মা ও শিশু হাসপাতাল স্থাপন করেন। ১৯৯২ সালে মায়ের নামে রহিমা বেগম একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৯৯২ সাল থেকে অন্ধত্ব মোচনের জন্য নিজ অর্থায়নে কাজ করেছেন, বিনা খরচে চালু করেছেন চক্ষু শিবির।
১৯৯৪ সালে দৌলুতপুর থানার বাড়াগাংদিয়াতে (বড়গাংদিয়া) নাসির উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। বিশেষ করে, দৌলতপুরের আল্লার দর্গাকে একটি শিল্প এলাকা হিসাবে গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ২০০২ সাল থেকে দৌলতপুর থানার প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো সম্প্রসারনের লক্ষ্যে নিজস্ব অর্থায়নে ১৪টি ইউনিয়নে ১৪টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করেন। বর্তমানে সরকারী করন হয়েছে। নাসির উদ্দিন বিশ্বাস শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও হাজার হাজার মানুষের কর্মের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। তিনি দৌলতপুর, কুষ্টিয়া তথা রাষ্ট্রের গুরুত্ব পুর্ন মানব সম্পদে রুপান্তরিত হয়েছেন। তিনি আমাদের গৌরব,তিনি আমাদের অহংকার। ১২ সেপ্টেম্বর আজ তার দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী।