দৌলতপুর প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কর্তৃপক্ষেও অব্যবস্থাপনার কারণে ২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দের সরকারি মেলা এক ঘন্টায় শেষ, বরাদ্দ কৃত টাকা লুটপাটের অভিযোগ,
সারাদেশের মতো কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ৫ জুন শনিবার গৃহপালিত পশু-পাখির মেলা হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে। ২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দের দিনব্যাপী এই মেলা শেষ হয় শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে।
প্রদর্শনী করতে ডেকে আনা হয় স্থানীয় বিভিন্ন এলাকার পশু-পাখি খামারিদের,যাদের অনেকের সাথেই নূন্যতম কোন সম্পর্ক এযাবৎ গড়ে ওঠেনি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের।
বড়গাংদিয়ার ছাগলের খামারি হিরা,জয়ভোগার সুকচাঁদ মন্ডল, নারায়নপুরের সরোউদ্দিন, তুহিন রেজা, সৌখিন পাখির ব্যবসায়ী সরোয়ার সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই জানান, গতরাতে তাদের ফোন করে আসতে বলা হয় মেলার উদ্দেশ্যে।
যার যার পশুপাখি নিয়ে মেলায় প্রদর্শনীর জন্য যথাসময়ে হাজির হয় তারা। কিন্তু, উপজেলা পরিষদ এলাকায় ছায়ানিবিড় জায়গা থাকা সত্বেও প্রচন্ড গরমে খোলা মাঠে,অব্যবস্থাপনার কারণে মেলায় টিকতে পারেনি খামারি-প্রাণী কেউই। দায়সারা এ মেলায় উদ্বোধনের পর কোন কর্মকর্তা দেখতে পাওয়া যায়নি।
প্রদর্শনী উদ্বোধনীর ঘন্টাখানেক পেরুলেও পশু-পাখির জন্য কোন খাবার বা পানির সুব্যবস্থা না করতে পারায় দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন আগত খামারিরা। বেলা ১২ টার মধ্যেই খালি হয়ে যায় মেলা প্রাঙ্গণ।
ফেরার পথে খামারিরা অভিযোগ করতে থাকেন– এখানে আসায় তাদের পশু-পাখির ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন রকম গাড়ি ভাড়া করে আনা-নেওয়া খরচও তাদের নিজেদের বহন করতে হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার সহযোগিতা করেনি।
প্রদর্শনী চলাকালীন সময়ে দেখা যায় উপজেলা পরিষদ এলাকার গাছের ডাল-পাতা ছিড়ে খামারিরা খাওয়াচ্ছেন নিজের যত্নে রাখা পশুকে। আলোচনা অনুষ্ঠানে ৪০ থেকে ৫০ টি খাবারের প্যাকেট দর্শক সারিতে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। খাবার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আমন্ত্রিত বা প্রদর্শনীর স্বার্থে ডেকে আনা ব্যক্তিরা।
এর আগে প্রদর্শনীটির বিষয়ে উল্লেখযোগ্য বা চোখে পড়ার মতো কোন প্রচার প্রচারণাও চালানো হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি গরুর খামারিদের প্রণোদনার টাকা নিয়েও দুর্নীতির নানা অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ব্যাপকভাবে খবরও প্রকাশিত হয়।
শনিবার সকালে প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য আঃকাঃমঃ সরওয়ার জাহান বাদশাহ্, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট এজাজ আহমেদ মামুন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, প্রদর্শনীতে ৫০টি স্টল রয়েছে। তিনি দাবি করেন, মাইকিংয়ের মাধ্যমে খামারিদের জানানো হয়, অংশগ্রহণে ইচ্ছুক আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাই করে অংশ নিতে দেয়া হয়েছে। প্রদর্শনীর বিষয়ে কোন তথ্য সুস্পষ্ট বা লিখিত বিবরণীতে দিতে পারেনি আয়োজক কর্তৃপক্ষ। ২ লাখ ৪৯ হাজার বরাদ্দ কৃত টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক এর বিরুদ্ধে।