খন্দকার জালাল উদ্দীন :কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের, ফিলিপনগর কেরানি পাড়া গ্রামের মৃত হাসমত আলীর ছেলে মানিক উজ্জামান নিজেই জানেন না তার বিয়ে হয়েছে। তার মায়ের দাবি আপন মামাতো বোন, দুই সন্তানের জননীর সাথে বিয়ে হয়েছে মানিক উজ্জামানের ।
এ বিষয়ে মানিক উজ্জামান বলেন, আমি একজন মাদ্রাসার ছাত্র আমার বর্তমান বয়স ১৭ বছর পার হয়ে ১৮ বছর চলছে। আমি ডাংমড়কা বাগোয়ান দারুল কোরয়ান ইসলামীয়া মাদ্রাসায় এতিমখানায় থেকে লেখা পড়া করছি। আমি ২০২২ সালে মোজ্জাম্মেল হক দাখিল মাদ্রাসা থেকে এস এস সি পাশ করেছি। হঠাৎ শুনছি আমার নাকি বিয়ে হয়েছে আমার মামাতো বোনের সাথে যার বয়স ৩২ বছর এবং ২ টি সন্তান রয়েছে। আমি কোন কাজি বা নিকাহ রেজিস্টার এর কাছে কখন ও যায় নাই তাহলে আমার বিয়ে হলো কি করে।
আমার মা খারাপ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে আমাকে ফাঁসাচ্ছে। আমি এই ঘটনার থেকে বাঁচতে চাই। আমার বাবা নেই আমি পড়াশোনা করে নিজের জীবনকে গড়তে চাই। তাই প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে দাবি আমার এই বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে আমাকে বাঁচার সুযোগ করে দিন । এ বিষয়ে মানিক উজ্জামান এর বোন, তানিয়া ও বিনা বলেন, আমার দুই ভাই জমজ মানিক উজ্জামান ও ফরহাদ হোসেন ( হিরো) ।
আমার মা মানিক নাম দিয়ে একটি আলাদা জন্ম নিবন্ধন তৈরি করেছে, যেখানে বয়স দেওয়া হয়েছে ২২ বছর। মানিক উজ্জামান এর জমজ ভাই ফরহাদ হোসেনের ও মানিক উজ্জামান এর স্কুল সার্টিফিকেট তদন্ত করলেই তাদের আসল নাম এবং বয়স বেরিয়ে আসবে। আমার মা একজন প্রবাসী সে কিছু দিন লেবালনে ছিল এবং ১ বছর সৌদি আরবে ছিল। সে ঔ মেয়েটার মানিক উজ্জামান এর সাথে বিয়ে দিয়ে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই সে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মানিক উজ্জামান এর ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করে অন্য ছেলেকে মানিক উজ্জামান সাজিয়ে কাজির কাছে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিয়েছে। মানিক উজ্জামান কোথাও কখনো বিয়ে করে নাই কারন মানিক উজ্জামান জানুয়ারীর ১৯ তারিখ থেকে আমার বাড়িতে অবস্থান করছে। আর তার বিয়ে দেখাচ্ছে ২২ তারিখে আমরা এ ঘটনার সুস্থ তদন্ত করে এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র কারিদের বিচার দাবি করছি।
মানিক উজ্জামান এর মা টিয়ায়ারা বলেন, মানিক আমার ভায়ের মেয়ের সাথে বিয়ে করে এখন বলছে বিয়ে করিনাই। পিয়ারপুর ইউনিয়ন কাজি আবুল কালাম এর কাছে গত ২৩/১/২৩ ইংরেজি তারিখে তাদের বিয়ে হয়েছে। মানিক উজ্জামান এর জন্ম নিবন্ধন ২ টা কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে মানিক উজ্জামান এর মা টিয়ায়ারা বলেন একটি পড়াশোনার জন্য ও একটি বিয়ের জন্য তৈরি করেছি। মানিক উজ্জামান তো বিয়ে করেনি বলে দাবি করছে তাহলে আপনি বিয়ে হয়েছে বলছেন কেমন করে এমন প্রশ্নের সদর তো দিতে পারেনি টিয়ায়ারা।
নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী আবুল কালাম বলেন, আমি সকল কাগজ সঠিক পাওয়ার পরেই বিয়ে পড়িয়েছি। এখানে আমার কোন দোষ নেই। মানিক উজ্জামান এর শিক্ষক মাওলানা হুচাইন আহম্মেদ বলেন, মানিক উজ্জামান আমাদের এতিমখানা মাদ্রাসায়, ডাংমড়কা -বাগোয়ান দারুল কোরয়ান ইসলামীয়া মাদ্রাসায় ৫ বছর অধ্যায়নরত আছেন। তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও রোল নম্বর ধরে সার্চ দিলে তার প্রকৃত বয়স ও নাম ঠিকানা বের হয়ে আসবে। তবে আমাদের ধারণা তার বয়স এখনো ১৮ বছর হয়নি। ফিলপ নগর ইউনিয়ন নঈম উদ্দিন সেন্টু বলেন, একই ব্যক্তির নামে দুটি জন্ম নিবন্ধন হওয়ার কথা নয় হয়তো আমার স্বাক্ষর নকল করে তৈরি করেছে। এমনটি হলে বিষয়টি আমি তদন্ত করে অবশ্যই দেখবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল জব্বার বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে মানিক উজ্জামান এসেছিলেন। বিষয়টি দুঃখজনক, কোন মা নিজের সন্তানের এমন ক্ষতি করতে পারি বলে আমার জানা নাই। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে প্রয়োজনে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।