খন্দকার জালাল উদ্দীন : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ভেঙ্গে পড়েছে এক মাসের মধ্যে ৪ খুন মারামারি-অগ্নি সংযোগ, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের সহ নানা অপকর্ম দিনদিন বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষ পড়েছে বিপাকে।
ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা :
দৌলতপুর উপজেলায় বটি দিয়ে কুপিয়ে চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাহাবুল ইসলাম। ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধায় উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের গরুড়া গ্রামের মিস্ত্রিপাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান।
নিহত সাইফুল ইসলাম দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের গরুড়া গ্রামের মিস্ত্রিপাড়া এলাকার সামছুল ইসলামের ছেলে। সে ডিম বিক্রেতা ও নসিমন চালক ছিলেন। অভিযুক্ত মাহাবুল ইসলাম নিহতের চাচাতো ভাই।
পুলিশ,নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,নিহত সাইফুল ইসলাম ও মাহাবুল ইসলাম আপন চাচাতো ভাই,পাশাপাশি বাড়ি। দুজনের সমবয়সী (৮ বছর) দুই ছেলে আছে। বৃহস্পতিবার তারা দুজন খেলার সময় ধাক্কাধাক্কি ও মারামারি করে। এই ঘটনার জের ধরে দুই ছেলের অভিভাবকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় মাহাবুল ও তার স্ত্রী কণা বটি দিয়ে কুপিয়ে সাইফুল ইসলামকে হত্যা করে।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের খড়িবোনার মাঠ থেকে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার :
দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের খড়িবোনার মাঠ থেকে মনিরুল ইসলাম এর ছেলে সোহাগ(১৪) নামে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে দৌলতপুর থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে নিহত সোহাগের চাচা হালিম ও জহুরুল বলেন, গত কাল শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে মাছ ধরার জন্য বের হয়। রাত হয়ে গেলেও বাড়িতে না আসলে অনেক খোঁজাখুজি করি পরে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যান কে জানিয়ে রাখি। ১২ মার্চ ২০২৩ দুপুর ২ টার দিকে মসলেম ফকিরের ছেলে তাহের আলী মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে আমির হোসেনের জমির মাঝে সোহাগকে পড়ে থাকতে দেখে আমাদের খবর দেয়। আমরা এসে দেখি সোহাগ মৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
নিহত সোহাগের পিতা মনিরুল বলেন, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমার শত্রুরা হয়তো আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তদন্ত করে দেখলে বের হবে।
ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা :
দৌলতপুর উপজেলার দৌলতখালী গ্রামের কাজল হোসেন(৪৫) নামে এক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। কাজল হোসেন দৌলতপুর সদর ইউনিয়নের ৭ নাম্বার ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য।
গত ১৫ মার্চ সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটে প্রতিপক্ষের বাড়ির সামনে তাকে কুপিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃহ:বার ভোর ৫ টার সময় তার মৃত্যু হয়।মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট, পরে দৌলতপুর থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, গত ১৫ মার্চ দুপুরে কাজল হোসেনের ভাতিজা ও তার সাথে থাকা সাঙ্গপাঙ্গ প্রতিপক্ষ আব্দুল মাবুদের ছেলে সোহাগ ও তার ভাতিজা বিজয়কে মারধোর করে। এই ঘটনা আপোষ মিমাংসা করার জন্য কাজল হোসেন গেলে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে আব্দুল মাবুদ হাঁসুয়া দিয়ে কাজলের ঘাড়ের পিছনে কোপ দেয়।
দু’পক্ষের মাদক ব্যবসায়ীর সংর্ঘর্ষ ও ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনায় চিকিৎসাধীন মঞ্জু মারা গেছে ॥ এলাকায় আইন শৃংখলার চরম অবনতি অগ্নিসংযোগ লুটপাট :
দৌলতপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংর্ঘর্ষ ও ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত মঞ্জু মন্ডল (৫০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। :
নিহত মঞ্জু মন্ডল উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের বিলগাথুয়া গ্রামের নুর হোসেন মন্ডলের ছেলে। এঘটনার জের ধরে রোববার সন্ধ্যায় বিলগাথুয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের লোকজন ৭ থেকে ৮টি বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং গরু-ছাগল ও ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র লুট করার খবর পাওয়া গেছে। এলাকায় পুলিশ পাহারা অবস্থায় এ ঘটনা সচেতন মহল বলছে আইন শৃংখলার চরম অবনতি লক্ষ্য করা গেছে।
বিলগাথুয়া গ্রামের ইস্রাফিল জানান আমাদের গ্রামে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে প্রতিপক্ষকে জব্দ করতে নিজেরা নিজেদের বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে সাধারণ মানুষের নামে ৩/৪টি করে মামলা দায়ের করছে। আমার দুই ছেলে তাবলিগ করে, তাদের নামে সাজানো মামলা করে হয়রানি করছে।