খন্দকার জালাল উদ্দীন : কুষ্টিয়া দৌলতপুরে ভেড়ামারার শিল্পী ক্লিনিকের মালিক আশরাফুল ইসলাম কে কৌশলে জিম্মি করে মোটরসাইকেল, নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা ।
এ বিষয়ে আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি ভেড়ামারা গোডাউন মোড়ের শিল্পী ক্লিনিক এর স্বত্বাধীকারী। সেই সুবাধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোকজন আমার ক্লিনিকে রোগী ভর্তির ব্যাপারে ফোন দেয়। ২৩/০৫/২০২৩ তাং সকাল অনুমান ১০টার সময় এক ব্যক্তি তাহার মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলে যে, ভাই আমার বোন অসুস্থ্য আপনার ক্লিনিকে ভর্তি করবো তার আগে আপনি যদি একটু আসতেন তাহলে রুগীর অবস্থা বুঝে ভর্তি করতে সুবিধা হতো।
আমি সরল মনে তাহাদের কথা মত ২৩/০৫/২০২৩ তাং দুপুর অনুমান ২ টার সময় আমার নামীয় খরিদ কৃত কালো হলুদ রঙ্গের রেজিস্ট্রেশন বিহিন টিভিএস ইস্টাইগার মোটরসাইকেল যোগে দৌলতপুর থানাধীন কাগহাটি তাহের মোড় গ্রামে নওয়াব আলী এর বাড়ির সামনে গেলে তরিকুল ইসলাম নামে ব্যক্তি নওয়াব আলী এর বাড়ির ভিতর ডেকে নিয়ে যায়। নওয়াব আলীর বাড়ির ভিতর যাওয়ার সাথে সাথে পূর্ব হইতে উপস্থিত থাকা ৫ থেকে ৭ জন ব্যক্তি পরস্পর যোগসাজস করিয়া পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমাকে মারধর করে
এবং আমাকে হত্যার হুমকি দিয়া আমার পরিধানে থাকা শার্ট ও প্যান্ট খুলে আমার আপত্তিকর অবস্থায়, মোঃ চঞ্চল, তোজাম্মেল, তরিকুল ইসলাম তাহাদের হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে অপরিচিত একজন মেয়ের সাথে আমার আপত্তির ছবি ও ভিডিও ধারন করে।
পরে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়া ১০০/- টাকার করে ০৬ খানা ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সহি স্বাক্ষর করিয়া নেয় এবং হুমকি দিয়া বলে যে, তুই যদি আজকের ঘটনা কাউকে বলিস তাহলে তোর এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবো।
সে সময় আমার কাছে থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ও কৌশলে আমার মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে নেয় তারা। এ বিষয়ে তদন্ত করে সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, এ ঘটনা নতুন না, কাগহাটি এলাকার নওয়াবের বাড়িতে এমন ঘটনা অনেক বার ঘটেছে। অনেকে সর্ব শান্ত হয়ে ফিরেছে এখান থেকে। এখানে একটি বিশাল চক্র কাজ করে। যে চক্রের প্রধান কাজ হচ্ছে যে কোন মানুষের পিছনে মেয়ে মানুষ লেলিয়ে দিয়ে এভাবে জিম্মি করে অর্থ আদায় করা। এই চক্রটিকে একাধিকবার পুলিশ আটক করলেও তারা এই কাজ এখনো বন্ধ করেনি।
আমরা এলাকাবাসী হিসেবে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই এই চক্রটিকে আটক করে এমন বিচার করা হোক বিচার দেখে আর কেউ ধরনের কাজ করতে সাহস না পায়।
এদিকে দৌলতপুর থানা পুলিশ মোটরসাইকেল চুরির তথ্য পাওয়ার সাথে সাথে থানা পুলিশ অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে এস আই সেলিম রেজা মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে চক্রের প্রধান তরিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নওয়াব সাহেবের বাড়িতে গিয়ে ছিলাম ভিডিও করতে। কেন ভিডিও করতে গেলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার বস এসেছিল কুষ্টিয়া থেকে তাই আমি আজ ১০ দিন আগে সাংবাদিক হয়েছি তাই গিয়েছিলাম।
চোরাই মোটরসাইকেল ক্রয়বিক্রয় করার সময় সেখানে আপনাকে দেখা গেছে এমন ছবি আছে। কেন চোরাই মোটরসাইকেল ক্রয়বিক্রয় করতে গেলেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন সেখানে আমি দেখতে গিয়েছিলাম কেমন করে চুরি হওয়া মোটরসাইকেল ক্রয়বিক্রয় হয়।
দৌলতপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান বলেন, আশরাফুল ইসলাম এর অভিযোগের ভিত্তিতে এস আই সেলিম রেজা সঙ্গীয় অফিসার নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে চোরাই মোটরসাইকেল সহ আল্লার দর্গা বাজার থেকে মিরপুর হলুদ বাড়িয়া গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন রাজিব
ও নতুন আমদহ গ্রামের সফিকুলের ছেলে রনি কে আটক করা হয়েছে। সে সময় তাদের কাছে থেকে ৭ টি মোটরসাইকেল, টি ভি এস ফোর ভি, হোন্ডা এক্স বুলেট, হিরো হোন্ডা সিডি ডন, সুজোকি জিক্সার, হোন্ডা ড্রিম, টিভিএস স্ট্রাইকার, ডিসকভার ১২৫ সিসি জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা একটি মামলা হয়েছে। এবং চক্রের সকল সদস্যকে আটক করার জন্য থানা পুলিশ কাজ করছে।