দৌলতপুরে ভূরকায় ২খুনের ঘটনায় মূল আসামী ধরা না পড়ায় নিহতের পরিবার হতাশ
দৌলতপুর প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া দৌলতপুরে ভূরকায় ২খুনের ঘটনায় মূল আসামী ধরা না পড়ায় ও এমপি’র বক্তব্যে নিহতের পরিবার হতাশ। এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী গত মঙ্গলবার বিকালে মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলা পাড়া গ্রামের শ্যামলের পাট খেতে ফরিদের গরু গিয়ে পাট খায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উজ্জ্বল সরদারের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে দুই জনকে হত্যা করে। উজ্জল সরদার বিএনপি’র ক্যাড়ার ছিল। বর্তমান এম পি’র ছত্রছায়ায় সে আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
হত্যাকান্ডের বিষয়ে কুষ্টিয়া দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারে দাবি করেন, উজ্জ্বল সরদারের লোকজন হয়তো মার্ডার টা করে ফেলেছে। তবে ঐ সময় উজ্জ্বল সরদার ঘটনা স্থলে ছিলনা। সামনে নির্বাচন তাই কিছু ব্যক্তি বিষয়টা মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রচার করাচ্ছে। বক্তব্যটি ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।
এদিকে ইতিমধ্যে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে উজ্জ্বল সরদারের নেতৃত্বে অনুমানিক ৫০ জনের একটি দল সংবদ্ধ হয়ে উজ্জ্বল সরদারের নেতৃত্বে হত্যা মিশন ও হত্যা শেষে ফিরে আসার চিত্র দেখা গেছে।
সংঘর্ষে নিহত শরিফুল মালিথার স্ত্রী চায়না, নিহত বজলু মালিথার স্ত্রী নাজমা, মকলেছুর মালিথার স্ত্রী মনজুরা বেগম বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে ছোটখাটো একটি মারামারি হয়। আমরা ভাবছি হয়তো এই ঘটনা নিয়ে বড় কোন কিছু হবে না। তাই আমরা থানা পুলিশ বা কাউকে বিষয়টা জানিয়ে ছিলাম না। হঠাৎ পরের দিন উজ্জল সরদারের নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ জন ব্যক্তি বাড়িতে এসে হামলা চালায়।
উজ্জ্বল সরদার নিজে পিস্তল দিয়ে গুলি বর্ষন করে। গুলি লেগে মালিথা গ্রফের লোকজন পড়ে গেলে, উজ্জ্বল সরদারের সাথে থাকা লোকজন এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে, স্থান ত্যাগ করে। এ বিষয়ে বাদী হয়ে উজ্জল সরদারকে প্রধান আসামি করে দৌলতপুর থানায় একটি মামলা হয়। এরপর পরপরই মিডিয়ায় দেখা যায় এমপি আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ, একটি বক্তব্য দিয়েছেন।
হত্যার ঘটনার সাথে উজ্জ্বল সরদার জড়িত না। এমপি নিজেই যদি একজন সন্ত্রাসীর পক্ষ নেই, তাহলে ন্যায্য বিচার কি ভাবে সম্ভব ? তাই পরিবার গুলি ন্যায্য বিচার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
এদিকে উপজেলার সুশীল সমাজের দাবি, উপজেলার শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন ঘটনায় পক্ষ বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় হত্যাকান্ডের ঘটনা সহ বিভিন্ন সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার পরে এটি একটি বৃহৎ উপজেলা, মথুরাপুর, হোসেনাবাদ ও ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ বাজারে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প ছিল। ক্যাম্পগুলো উঠে যাওয়াতে কোন ঘটনায় সংবাদ পাওয়ার পরেও পুলিশের ঘটনা স্থানে পৌছাতে ১ ঘন্টা সময় লাগে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কুষ্টিয়া ১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ এক ভিডিও বার্তায় বলেন , বিভিন্ন মিডিয়া যে আমার কথাটি প্রচার করা হয়েছে সেটা একটি অংশ মাত্র। আমার সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রচার করা হয় নাই। তবে এই হত্যাকাণ্ডের আমিও বিচার চাই।এই হত্যাকান্ডে যারাই জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
দৌলতপুর ভেড়ামারা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসীন আল মুরাদ বলেন, ইতিমধ্যে জেনেছেন হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত এজাহার নামীয় ৫ নং আসামী সহ বেশ কিছু ব্যক্তিকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে পলিশ। আটককৃত ব্যক্তির দেওয়া তথ্যমতে উজ্জ্বল সরদারের বেডরুম থেকে একটি আগ্নেয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে । এই হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আটকের জন্য পুলিশ কাজ করছে। মূল আসামী ধরা না পড়ায় ও এমপি’র বক্তব্যে নিহতের পরিবার হতাশ।