খন্দকার জালাল উদ্দীন : কুষ্টিয়া দৌলতপুরে গত কয়েক মাস আগে জমি জায়গার বিষয়কে কেন্দ্র করে ১২ টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। এমনি একটি ঘটনা ঘটার শঙ্কায় রয়েছে তেকালা গ্রামের মানুষ।
তেকালা এলাকাবাসী বলেন, ধর্মদহ গ্রামের মৃত আবুল কাশেম মন্ডল এর তেকালা মৌজার প্রায় ২০ একর ২ শতাংশ জমি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দলিল ও দখল মূলে তার ওয়ারিশ গন ভোগদখল করে আসছে। এমত অবস্থায় মৃত জফের আলী শাহ ছেলে নুরুজ্জামান শাহ বিভিন্ন সময় জমি দখল নেওয়ার জন্য পূর্বে থেকে একাধিক বার আদালতে মামলা করে এবং মামলায় ৮ ডিগ্রি আবুল কাশেমের ওয়ারিশদের পক্ষে রায় হয়। এর পরে তারা আবার হাইকোর্টের আপিল ডিভিশনে মামলা করে যাহা চলোমান। মামলা নং ৩৪৯৪/২০১৮।
এ জমি নিয়ে প্রথম বিবাদের জেরে আবুল কাশেমের ওয়ারিশ গনের আব্দুর সত্তার ৩/৮/১৯৭৯ ইং তারিখে নিহত হন ও ১৯৯৫ সালে ৪ আগষ্ট গোলাম সরওয়ার নিহত হন, সর্ব শেষ এই জমি নিয়ে সালিশি বৈঠক শেষে আদাবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ছুরিকাঘাতে ২/৩/২০২২ ইংরেজি তারিখে টুটুল হোসেন নিহত হন। আবার ও এলাকায় যা চলছে তাতে যে কোন সময় সংঘর্ষে কেউ না কেউ নিহত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
বর্তমানে নুরুজ্জামান শাহ এর পক্ষে তেকালা গ্রামের মৃত হামেজ মিস্তিরির ছেলে লোকমান হোসেন ও রাসেল আহাম্মেদ তোপু, সাব্বির হোসেন, সোহেল রানা, বকুল হোসেন, সামিরুল ইসলাম,বাবু হোসেন সহ অনেকে যোগসাজশে জমি দখলের চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ধর্মদহ গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মনিরুল ইসলাম ও সাবেক মেম্বার তোতা বলেন, আমাদের নিজের নামিয় দখলি, রেকর্ডি ও আমাদের নামে খাজনা চলছে সেই আবাদি জায়গা জমির ফসল কেটে দিয়েছে স্থানীয় রাসেল আহাম্মেদ তোপুর নেতৃত্বে ।
যারা গত ২/৩/২০২২ ইং তারিখে এই জায়গা জমিকে কেন্দ্র করে আমাদের ভাই টুটুল কে হত্যা করেছে। জমি নিয়ে কোর্টে মামলা চলমান আছে মামলা নং ৩৪/৯৪। সেই জমি আমার ভাই এর হত্যাকারিরা আবার দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের ফসল কাটার সময় হয়েছে। সেই সময় তারা গুন্ডা বাহিনী দিয়ে দখলের চেষ্টা করছে, এবং ২/৮/২০২৩ ইংরেজি তারিখে ফসল কেটে দিয়েছে । আমরা মারামারি চাইনা তাই দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ দেওয়ার এক সপ্তাহ পার হলেও প্রশাসনের কোন ভূমিকা নাই। আমরা প্রানের ভয়ে মাঠে যেতে পারছিনা। এই চক্রটি দৌলতপুর থানায় নতুন ওসি’র সাথে যোগাযোগ করলেই মোটা অংকের অফার দিয়ে ভুলভাল বুঝিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে আসছে, এই বার দিয়ে প্রায় ৫ বার তার চেষ্টা করেছে । ঠিক সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের ধারনা তেকালা ক্যাম্প পুলিশের আই সি এস আই আব্দুর রহমান এর সাথে সাব্বির ও তোপুর সখ্যতার কারণে তার মাধ্যম দিয়ে আবার হয়তো ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে এবং প্রশাসন পক্ষপাত মূলক আচরণ করছে। তাই শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি ।
অভিযুক্ত রাসেল আহাম্মেদ তোপু বলেন, এই জমি দীর্ঘ ৪৭ বছর মৃত আব্দুল কাসেম মন্ডলের লোকজন পেশি শক্তির বলে দখল করে খাচ্ছে। আমাদের লোকজনের নামে খাজনা খারিজ থাকা সত্বেও আমরা নিতে পারছিনা। আমরা বর্তমানে কোর্টের রায় পেয়েছি তার পরেও আমরা দখলে যেতে পারছিনা। প্রশাসনের কাছে তদন্ত পূর্বক জমি ফেরতের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে তেকালা ক্যাম্প ইনচার্জ আব্দুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি বা কোন অভিযোগ পাই নাই, আমার কোন সম্পৃক্ততা নাই।
অভিযোগ তদন্তকারী অফিসার এস আই মাছুম বিল্লাহ বলেন, থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত চলোমান রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।