দৌলতপুর প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা বাজারে কথিত পীর ভূসি দস্যু তাছেরের অবৈধ আস্তানা উচ্ছেদ,রাশেদ হত্যা ও নারী নির্যাতনের বিচারের দাবিতে হাজার হাজার এলাকাবাসীর বিভিন্ন প্লাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন
দৌলতপুরে কথিত ভন্ড পীর তাছের ও তার অপকর্মের আস্তানা চরদিয়ার পাক দরবার শরিফ নামের আড়ালে থাকা মানুষ ঠকানোর কারখানা। গত ৭-০১-২০২২ তারিখ শুক্রবার বিকেলে নারী লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ও ভন্ডপীর তাছেরের অপকর্মের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠা উত্তেজিত জনতা দরবারে হামলা চালায়। স্থানীয় জনসাধারণের রোষানল থেকে ভন্ডপীর তাসের উদ্দিনকে ও তার অপকর্মের আস্তানাকে রক্ষার নামে তাসেরের অনুসারীরা নীলনকশা বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছে, কথিত এই ভন্ড পীর কে বাঁচাতে ৯-০১-২০২২ তারিখে কুষ্টিয়া ডিসি কোর্ট প্রাঙ্গণে লোক দেখানো মানববন্ধন করে, কিন্তু এসব করেও কি পার পাবে ? আদালত কে তামাসায় পরিণত করা আইন ভঙ্গকারী ভন্ডপীর তাসের উদ্দিন।
তাসেরের সকল অপকর্মের প্রতিবাদে ১০ জানুয়ারী সোমবার বিকালে কল্যানপুর ও আল্লারদর্গা বাজারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বক্তব্যে উঠে আসে দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের কল্যাণপুরে অবস্থিত কথিত “দরবারে রেসালাতে মোজাদ্দেদিয়া” দরবার শরিফে, এখানকার পীরের সম্পর্কে জানতে চাইলে এলাকাবাসী জানান চোর তাসের উদ্দিনের পীর তাসের হয়ে উঠার গল্প,যা যে কোনো সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে।নব্বই দশক থেকে আল্লার দর্গা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চোর-ডাকাত দলের নেতৃত্ব দিতো এই তাসের,নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য তৎকালীন উগ্রবাদীদল “ফ্রীডম পার্টি” তে নাম লেখায় তাসের,৯৫ সালে একটি সাইকেল চুরির অপরাধে সহযোগীসহ হাতে নাতে ধরা খেয়ে আল্লারদর্গা হাইস্কুল মাঠে জনতার বেদম গণধোলাই খায়,এর পর আরোও চুরি-ডাকাতির অভিযোগে ৪/৫বছর এলাকা ছাড়া হয়, আজকের ভন্ডপীর তাসের উদ্দিন। এরপর ২০০০ সালের দিকে এলাকায় ফিরে এসে ভালো হওয়ার ঘোষণা দিয়ে উক্ত এলাকায় গড়ে তোলেন ছোট্ট একটি বসার আস্তানা,এর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, তাকে।ধর্মান্ধ কিছু মানুষের “মগজ ধোলাই” করে শুরু করে ধর্মব্যবসা, বিনাপূজিতে বিশাল লাভ জনক ব্যাবসার ফাঁদ পেতে ফেলেন তিনি,তার বসার আস্তানার পাশে ঈদগাঁহ ও গোরস্তানের জায়গা দখল করে সম্প্রসারণ করেন আস্তানা এরপর বিভিন্ন লোকের জমি অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক দখল এমনকি পাশে হিসনা নদী দখল করে এই ভূমি দস্যু তাসের উদ্দিন বর্তমানে গড়ে তুলেছেন এক বিশাল সাম্রাজ্য, আরও জানা যায়, মোজাদ্দেদিয়া তরিকায় প্রধান ধর্মগুরু বা পীরের দায়িত্ব পালন করছেন এই চোর-ভূমি দস্যু ও আইনের চোখে ফেরারী তাসের উদ্দিন।
সবকিছু ঠিকঠাক পরিকল্পনা মাফিক চলছিল তাসেরের, আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও আইনের কোনো জটিলতা ছিলো না, সাধারণ মানুষের ধর্মবিশ্বাস কে পুঁজি করে ধর্মব্যবসার মাধ্যমে প্রতি বছর ওরসের নামে কোটি কোটি টাকা তিনি কামিয়েছেন, খরচও করতেন তিনি “বাবার দরবারে কেউ ফেরেনা খালি হাতে” এই অবৈধ ধর্মব্যবসা টিকিয়ে রাখতে জেলার বড় বড় পদ ধারীদের মাসে মাসে দিতেন মোটা অংকের মাসোহারা, এ ভাবে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তাসের উদ্দিন। কথায় বলে “ধর্মের কল বাতাসে নড়ে” হটাৎ ০৬-০৬-২০২১ তারিখে খুন হয় দরবারের এক ভক্ত রাসেদ,এরপর থেকেই বেকায়দায় পড়তে থাকে ভন্ডপীর তাসের উদ্দিন, খুনের মামলার আসামী হয়, এরপর থেকেই পলাতক আছে তাসের,পলাতক আসামী হয়েও কুষ্টিয়ার আদালত কে ধোঁকা দিয়ে গিয়ে বোকা হয়েছেন, ভক্ত রাসেদ হত্যা মামলায় গত ১৭-১০-২০২১ তারিখে কুষ্টিয়ার আদালতে ভুয়া তাসের উদ্দিন সাজিয়ে অন্য আরেক ভক্তকে জেল হাজতে পাঠায় এই বিশ্বপ্রতারক ভন্ড পীর তাসের উদ্দিন।
সংক্ষেপে এই হলো তাসের উদ্দিনের পীর হওয়ার গল্প, নেপথ্যে আছে আরও কথা,এই যখন পীরের অবস্থা তখন পীরের সাগরেদ বা অনুসারীদের চরিত্র কি রুপ হবে তা সহজেই অনুমেয়,স্থানীয় লোকজন আরও বলেন,এই এলাকাকে মাদকসেবিদের অভয়ারণ্যে পরিনত করেছে দরবারের লোকজন,কুষ্টিয়া সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মাদকসেবীরা দরবারের আশপাশের স্থানে মাদকসেবন করে চলে যায়, আর মাদক ব্যাবসায়ীরা দরবারকে নিরাপদ আশ্রয় স্থল হিসেবে ব্যবহার করে আর এ কারনেই কথিত দরবারে সব সময় থাকে কঠোর পাহারার ব্যাবস্থা, যাতে করে বাইরের কেউ সহজেই ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।এ সব বিষয় নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে মতবিরোধ চলে আসছিলো এই প্রতারক চক্রের সাথে, স্থানীয় জনতার দরবারে হামলার কারন অনুসন্ধানে জানা যায়,দীর্ঘদিন প্রায় ৭মাস যাবৎ ভন্ড তাসের উদ্দিন পলাতক আছে,তার দরবারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে,সেই সাথে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে তার অবৈধ ব্যাবসার দেখভালকারীরা,এমতাবস্থায় দরবারের সবাইকে সুসংগঠিত করতে দরবারে আরও কঠোর পাহারা এবং জনবল বৃদ্ধি করতে থাকে,এবং যাতে এলাকাবাসী দরবারের কাছে ঘেঁষতে না পারে তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।এমতাবস্থায় দরবারে পাশে নদীতে নামা এক মহিলাকে কটুবাক্য করা কে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটে, যা ভন্ডপীর তাসের উদ্দিনের একটি নীলনকশা মাত্র, কেননা এ হামলায় দরবারে যতোটা ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে লাভ হয়েছে অনেক বেশি,হত্যা মামলার পলাতক আসামী তাসের উদ্দিনের প্রতি ও দরবারের প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা বাড়িয়েছে, যা তাসের উদ্দিনের এই মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, পাশাপাশি এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে যাদের কে শক্ত প্রতিপক্ষ মনে করবে, তাদের ফাঁসিয়ে দিতে পারবে,আপাতত ভন্ডপীর তাসের উদ্দিনের নীলনকশা শতভাগ সফল বলাই যায়।এ দিকে দরবারের পক্ষ থেকে হামলায় যে সকল ক্ষয়ক্ষতির কথা বলা হচ্ছে তা সব সত্যি নয়,কেননা দীর্ঘ ৭ মাস যাবৎ আস্তানা টি বন্ধ আছে এখানে বিশাল খাদ্য ভান্ডার,গবাদিপশু থাকার বিষয়টি হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়।
কথিত পীর ভূসি দস্যু তাছেরের অবৈধ আস্তানা উচ্ছেদ,রাশেদ হত্যা ও নারী নির্যাতনের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন । এলাকাবাসী বানব বন্ধেেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সুষ্ঠ তদন্ত করে বিচার দাবী করেছে।