নাটকীয়তা শেষে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত বাংলাদেশী যুবক লিটন বিশ্বাসের লাশ ১৫দিন পর ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। শনিবার বিকাল ৫টার দিকে দৌলতপুর সীমান্তের ওপার ভারতের কুমড়িপাড়া সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে লিটন বিশ্বাসের লাশ ফেরত দেওয়া হয়। পরিবারের পক্ষে নিহতের ছোট ভাই শিপন বিশ্বাস লাশ গ্রহণ করেন।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, লাশ ফেরত নিয়ে বিএসএফ’র নানা নাটকীয়তা শেষে দীর্ঘ দুই সপ্তাহ পর শনিবার বিকাল ৫টায় লিটন বিশ্বাসের লাশ ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। লাশ ফেরত নিয়ে ১৫১/১৪(এস) সীমান্ত পিলার সংলগ্ন দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া সীমান্তের ওপার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার কুমড়িপাড়া সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠককে বিজিবি’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনস্থ প্রাগপুর কোম্পানী কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) নায়েক সুবেদার আমজাদ হোসেন। এসময় দৌলতপুর থানা পুলিশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, তেকালা ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জিয়াউর রহমান। বিএসএফ’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১৪১ বিএসএফ কমান্ডেন্ট অধিনস্থ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয় জেলার হোগলবাড়িয়া থানার অর্ন্তগত চরমেঘনা ক্যাম্পের ইনচার্জ এসি রাজেশ টিকে লাকরা। এসময় ভারতের করিমপুর থানার সিআই মো. ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন। পতাকা বৈঠক শেষে বিএসএফ’র পক্ষ থেকে লিটন বিশ্বাসের লাশ বিজিবি’র নিকট হস্তান্তর করা হয়। বিজিবি লাশ গ্রহণ শেষে নিহত লিটন বিশ্বাসের ছোট ভাই শিপন বিশ্বাসের নিকট তা বুঝিয়ে দেন।
উল্লেখ্য, ৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর সীমান্তের ওপার ভারত ভূ-খন্ডে বিএসএফ’র গুলিতে লিটন বিশ্বাস (৩২) নামে বাংলাদেশী মাদক চোরাকারবারী যুবক নিহত হয়। সে দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন বিলগাথুয়া গ্রামের আকবর আলী বিশ্বাসের ছেলে। ওইদিন রাতে লিটন বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল মাদক চোরাকারবারী ভারত থেকে মাদক পাচার করছিল। এসময় ১৫১-৬(এস) সীমান্ত পিলার সংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার মেঘনা সীমান্তে ১৪১ বিএসএফ কমান্ডেন্ট অধিনস্থ মেঘনা ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে লিটন বিশ্বাস নিহত হলে অপর মাদক চোরাকারবারীরা বাংলাদেশ সীমানায় পালিয়ে আসে। পরে বিএসএফ লিটন বিশ্বাসের লাশ উদ্ধার করে হোগলবাড়িয়া থানায় সোপর্দ করে। হোগলবাড়িয়া থানা পুলিশ নিহত যুবকের লাশের ময়না তদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। নির্মম হত্যাকান্ডের ১৫দিন পর লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।